অনেকেই আছেন যারা অন্যের উপকার করতে চান —কিন্তু সবসময় সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
আলহামদুলিল্লাহ, আমি আমার জীবনে বহু মানুষের মাধ্যমে উপকার পেয়েছি—তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।
আর মহান আল্লাহ আমার মাধ্যমেও অনেক সময় পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, সহকর্মী ও সমাজের উপকার করিয়েছেন—এটা আমার জীবনের অন্যতম বড় সৌভাগ্য।

তবে বাস্তবতা হলো—জীবনে যাদের সবচেয়ে বেশি উপকার করেছি, তাদের মধ্যেই কিছু মুখ এমনভাবে ক্ষতি করতে চেয়েছে, যা অকল্পনীয়। তবে আমি কাউকে দোষ দেই না। সময়ের দাবি হয়তো তাদের বদলে দিয়েছিল।

লেভেল-১ পেরুলেই লেভেল-২ আসে। চেয়ারম্যান এমপি হতে চান, এমপি মন্ত্রী হতে চান—এটাই সময়ের বাস্তবতা।
প্রতিযোগিতা আর চাওয়া-পাওয়ার এই দৌড়ে কৃতজ্ঞতা অনেক সময় পেছনে পড়ে যায়।

উপকারীর অপকার করলে আলাদা করে বিচার চাইতে হয় না। অদৃশ্য এক শক্তি নিজেই বাদী হয়ে মামলা নিয়ে রাখে। আল্লাহ, প্রকৃতি বা ভাগ্য—যেভাবেই বলুন, তিনি/তার মাস্টার প্ল্যানিং নিয়ে আছেন। কবে, কোথায়, কিভাবে, কোন পন্থায় বিচার হবে—সব নকশা তৈরি। শুধু সময়ের অপেক্ষা। জীবনে যখনই কেউ আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, সে হয় পিছিয়ে পড়েছে, নয়তো আমার পেছনটাও দেখতে পাচ্ছে না, কারণ মাঝখানে আমি গড়ে তুলেছি এমন কিছু, যা তার অতিক্রম করা সম্ভব না।

আর যখনই আমি কারো প্রতিযোগী হয়েছি,
আমি পুড়েছি, জ্বলেছি, নিজেকে ভেঙে আবার গড়েছি
প্রয়োজনে রাত-দিন এক করে দ্বিগুণ পথ পাড়ি দিয়েছি।
শেষে সাফল্যের হাসিতে সব ক্লান্তি ভুলে গেছি।

অকৃতজ্ঞতার বাস্তবতা: এই পৃথিবীতে কৃতজ্ঞ মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমছে। আজকের মানুষ যেন সহজাতভাবেই উপকারীর উপকার অস্বীকারে অভ্যস্ত। আর আপনি হয়তো ভাবছেন, "আমার সাথেই কেন এমন হচ্ছে?" না, এটা কেবল আপনার না—মানব সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ অকৃতজ্ঞ। আপনি যার উপকার করেছেন, সে মনে মনে হয়তো জানে। কিন্তু সে মুখে তা স্বীকার করবে না। এমনও হতে পারে, সে আপনাকে চিনতেই অস্বীকার করছে। কিংবা প্রকাশ্যে না হলেও আড়ালে সে-ই আপনার সবচেয়ে বড় সমালোচক হয়ে উঠেছে।

সবচেয়ে কষ্টদায়ক বিষয়টা হলো: একদিন যার পাশে আপনি ছিলেন, সময়ের সাথে তিনিই আপনার সবচেয়ে কঠিন সমালোচক হয়ে ওঠে। কিছু মানুষ আছে—কারো প্রস্থানে কষ্ট পায়, এরা সাধারণ। আবার কিছু মানুষ শূন্য জায়গা দেখেই সেখানে নিজেকে বসিয়ে খুশি হয়, এরা তথাকথিত "অসাধারণ"! এই “অসাধারণ” মানুষেরাই পৃথিবীর ৯০% মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে।

এরা ফিউচারিস্টিক, ক্ষমতালোভী—সম্পর্ক, বন্ধন, সম্মান—এই শব্দগুলোর আসল মানে এদের কাছে নেই।

তাই উপকার করার পর...কঠিন সমালোচনাকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।নিজেকে বোঝাতে হবে: আমি যা করেছি, তা একমাত্র পরম করুণাময় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য

আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন:

“আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তি সবচেয়ে প্রিয়,
যে মানুষের সবচেয়ে বেশি উপকার করে।”


উপকার করুন, কিন্তু মনে রাখুন—আপনার ভালোবাসা সবার পক্ষে ধারণ করা সম্ভব না।
তাই আপনি ভালো থাকুন, শান্ত থাকুন—উপরওয়ালার সন্তুষ্টির জন্য কাজ করু, কারণ তিনি সব দেখছেন, সব রাখছেন, সব ফেরত দেন—ঠিক সময়মতো।


Md. Faruque Hossain
Sales team & tools specialist


4 Comments

  1. যথার্থ বলেছেন স্যার। আমাদের চট্টগ্রামের ভাষায় একটা কথা আছে, যতক্ষণ পাতত ভাত, ততক্ষণ আশিরবাদ.! (যতক্ষণ পাতে ভাত, ততক্ষণ আর্শিবাদ)। আর এটার প্রমাণও আমি নিজেই।
    ধন্যবাদ..

    ReplyDelete
  2. চিরন্তন সত্য, আমাদের জন্মের পূর্বেও ছিলো, এখনো আছে,থাকবে আমাদের মৃত্যুর পরেও।
    তারপরও স্যার উপকার করে যেতে হবে, আল্লাহ নিজ হাতে উপকার করে দিবেন।

    ReplyDelete
  3. 13, 2023 at 10:29 PM
    চিরন্তন সত্য, আমাদের জন্মের পূর্বেও ছিলো, এখনো আছে,থাকবে আমাদের মৃত্যুর পরেও।
    তারপরও স্যার উপকার করে যেতে হবে, আল্লাহ নিজ হাতে উপকার করে দিবেন।

    ReplyDelete
  4. Absolutely Right dear Sir

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post